বাংলার সময়প্রমাণ মিলেছে কালকিনি পৌর মেয়রের দুর্নীতির
সঞ্জয় কর্মকার অভিজিৎ
মাদারীপুরের কালকিনি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। এই প্রেক্ষিতে এনায়েত হোসেন হাওলাদারকে মেয়র পদ থেকে কেন অপসারণ করা হবেনা জানতে চেয়ে নোটিশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। জনপ্রতিনিধিদের এমন দুর্নীতির ঘটনা ন্যাক্কারজনক বলে তার শাস্তি দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ। অবশ্য মেয়রের দাবি, রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার তিনি।
গেলো ৬ জুন মাদারীপুরের কালকিনি পৌর মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে অনাস্থা দেন ৮ জন কাউন্সিলর। পরে মেয়রের বিরুদ্ধে প্যানেল মেয়র গঠন না করা, কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, মাসিক সভা না করাসহ ৬টি অভিযোগ এনে ১১ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর অভিযোগপত্র জমা দেন কাউন্সিলরা। এর প্রেক্ষিতে ২ জুলাই মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের এম ইদ্রিস সিদ্দিকী নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি। মেয়র ও কাউন্সিলরদের কাছ থেকে আলাদা বক্তব্য গ্রহণ করে কমিটি।
এরপর গেলো ১১ জুলাই মেয়রের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাকে কেন মেয়র পদ থেকে অপসারণ করা হবেনা জানতে চেয়ে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এদিকে জনপ্রতিনিধিদের এমন দুর্নীতির ঘটনা ন্যক্কারজনক বলে শাস্তির দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজ।
ভুক্তভোগী কাউন্সিলদের অভিযোগ, আমরা মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছি। কেননা, মেয়র কোন কাজে আমাদের সম্পৃক্ত করে না। এবং তিনি মাসিক-সভাও করে না।
মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সানক) সভাপতি খান মো. শহীদ বলেন, ' এই অভিযোগ যথাযথভাবে তদন্ত হোক। সেই সঙ্গে তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।'
অবশ্য মেয়রের দাবি, রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার তিনি। আইনিভাবে মোকাবেলা করে জয়ী হবার আশা তার।
মাদারীপুর কালকিনি পৌরসভার মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার বলেন, ' আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত না। জনপ্রতিনিধিকে কাউন্সিলররা চাইলে বাদ দিতে পারবে না, আর সেই আইনটা আমার পক্ষে।'
মেয়রের দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার বিভাগের এই কর্মকর্তা জানান, লিখিত জবাব পাওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মাদারীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. রাসেল সাবরিন বলেন, ' ওই জনপ্রতিনিধিকে কারণ দর্শানোর কথা বলা হয়েছে। আর কারণ দর্শানোর পরে মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবে।
মেয়র এনায়েতের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পর ওই কাউন্সিলরদের উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। সাড়ে ৩১ কিলোমিটার আয়তনের কালকিনি পৌরসভা মোট জনসংখ্যা ৪৬ হাজার ২৫৬ জন।