বাংলার সময়মাদারীপুরে পাম্পের ‘দূষিত পানি’ বিক্রি
সঞ্জয় কর্মকার অভিজিৎ
মাদারীপুরে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দু'টি পানির পাম্প জনসাধারণের কোনো কাজেই আসছে না। সুপেয় পানি সরবরাহ করার কথা থাকলেও পাম্প থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে আয়রনযুক্ত নোংরা ও দূষিত পানি। এতে জন্ডিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের আশঙ্কায় আছেন এলাকাবাসী। জনস্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি অস্বীকার করলেও ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসকের।
জনসাধারণকে সুপেয় পানি সরবরাহ করার লক্ষে গত বছরের ডিসেম্বরে রাজৈর কবিরাজপুর ও শিবচর উপজেলায় নিখোলিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় তিনকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে একটি পানির পাম্প। এরপর বাসা বাড়িতে সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষে প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া হয় দুই হাজার নয়শত টাকা।
২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আট ঘণ্টা পানি সরবরাহের কথা থাকলেও পাম্প চালুর পর থেকে গ্রাহকদের দেয়া হচ্ছে তিন থেকে চার ঘণ্টা পানির সুবিধা। তাও আবার মাত্রাতিরিক্ত আয়রনযুক্ত ও দূষিত পানি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এরপরও দুইটি পাম্পের এক হাজার ১২০ জন গ্রাহক প্রতিমাসে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত পানি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী বলেন, ‘পানির আনার সময়ে ২৯০০ টাকা দিয়েছি, এরপর মাসের পর মাস টাকা দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও পানিতে আয়রন রান্না করা যায় না। সেই সঙ্গে আতঙ্কে দিন পার করতেছি, কখন অসুখে পড়ে যাই।’
এদিকে, নোংরা পানি সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। আর এই ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নন নির্বাহী প্রকৌশলী।
রাজৈর ও শিবচর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ আলী মাতবর বলেন, ‘ওই এলাকার চেয়ারম্যানও বলেছেন পানি ভালো। এছাড়াও এলাকাবাসীর সঙ্গে মিটিং করেছি, সেই সময়ে তারা বলেছেন পানি ভালো।’
এই প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কি-না, সেটা ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। যদি দেখি এর মধ্যে দুর্নীতি রয়েছে। তাহলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দীর্ঘদিন ধরে আয়রনযুক্ত নোংরা পানি ব্যবহার করলে জন্ডিস, কলেরা ও ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগ হতে পারে জানিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন।