মহানগর সময়সেই রানার দায়িত্ব নিলেন এলিট
সময় সংবাদ

বিএনপির শাসনামলে হামলার শিকার হওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানার দায়িত্ব নিলেন সংগঠনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট।
রানার দায়িত্ব নেওয়া সম্পর্কে এলিট বলেন, মে মাসে আমার কাছে খবর আসে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মোতাহার হোসেন রানা ভাই ভালো নেই। নিদারুণ অর্থ-কষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছেন। চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তখনি আমি নিজ উদ্যোগে আছিফ রহমান শাহীনকে রানা ভাইয়ের বাড়িতে পাঠাই। রানা ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলি। উনাকে সর্বোচ্চ সাহায্যের আশ্বাস দিই।
তিনি আরও বলেন, রানা ভাই কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। দেশে বিদেশে আজকে সবার রানা ভাই এর জন্য মন খারাপ। সবাই ব্যতীত। মর্মাহত। তার দায়িত্ব আজ থেকে আমি নিলাম। ওনার চিকিৎসা খরচ, সন্তানদের পড়ালেখার খরচসহ আমি ওনাকে প্রতি মাসে একটি সম্মানী দিবো। যা উনার নিজের ব্যক্তিগত হিসাবে জমা হবে।
জানা যায়, মোতাহার হোসেন রানা ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী মুঈনু-ইকবাল পরিষদের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবি জসীম উদ্দীন হলের বাদশা-মোক্তার প্যানেলের নাট্য ও সামাজিক অনুষ্ঠান বিষয়ক সম্পাদক এবং হল শাখা ছাত্র লীগ সভাপতি। ১৯৯০ সালে সামরিক জান্তার সময়ে তিনি বর্তমান আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সঙ্গে ৬৪ জেলায় ছাত্রনেতা হিসাবে ঘুরেছেন।
বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের মারাত্মক হামলার স্বীকার হন রানা। সেই হামলায় তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলানো হয়। মৃত ভেবে ঘাতকরা রানাকে ফেলে চলে যায়। সে হামলায় রানার অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হানি ঘটে। মোতাহার হোসেন রানা বিকলাঙ্গ হয়ে যান।
রানা চিকিৎসা নেন ঢাকার তৎকালীন পিজি হসপিটালে, যা বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানকার ডাক্তাররা জানান, তার যা ক্ষতি হওয়ার ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। সময়মত তার যথাযথ চিকিৎসা হয়নি, হলে হয়তো রানা সুস্থ হয়ে ফিরতে পারতেন।
হাসপাতাল থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে গেলে মোতাহার হোসেন রানাকে প্রথমে ২০০৪ সালে ৯ জুন ধানমন্ডির সভাপতির কার্যালয়ে প্রতিনিধি হিসাবে থাকা-খাওয়া ফ্রি করে মাসিক বেতন ধার্য করে রাখেন এবং ২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিশাল বিজয় নিয়ে জয়যুক্ত হয়ে সরকার গঠন করে ৫ এপ্রিল ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাটলার পদে ফ্রিভিলিজ কর্মচারী হিসাবে চাকরিতে রাখেন। তবে সেই বেতনে আজকের দিনে মোতাহার হোসেন রানার ৮ জনের পরিবারের ভরণ পোষণের খরচ চালাতে নিত্যদিন হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তার উপর ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার খরচ বহনসহ নিজের চিকিৎসা চালিয়ে দুই বেলা দু'মুঠো খাবার জোগাড় করাটা মোতাহার হোসেন রানার জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপারে দাঁড়িয়েছে।